Sharewhy.com ওয়েবসাইটে আপনাদেরকে অনেক অনেক স্বাগত জানাই। আজ আমরা জানবো শেয়ার বাজার কি? শেয়ার বাজারে কিভাবে বিনিয়োগ করবেন? বা শেয়ার বাজারে শেয়ার কিনতে হয় কিভাবে? শেয়ার বাজার কাজ কিভাবে করে? বা শেয়ার মার্কেট সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য আপনারা জানতে পারবেন।
শেয়ার বাজার এ প্রবেশ করার আগে আপনাদের জ্ঞান বৃদ্ধি করা অত্যন্ত প্রয়োজন, আর আজকের মূল্যবান তথ্য গুলি আপনাদের জীবনে শেয়ার বাজার সম্পর্কিত অনেক বেশি জ্ঞান বৃদ্ধি করবে, তাই আর্টিকেলটি অবশ্যই পুরোটা পড়ুন।
শেয়ার বাজার কি?
যেমন ধরুন আপনি সবজি বাজার যান সেখানে কখনো সবজি সস্তায় পাওয়া যায়, আবার কখনো বেশি দাম হয়,তাই আমরা দামদর করে সবজি কিনি। অনেক সময় আমরা সস্তা সবজি কিনি, কিন্তু তার পর দেখি তার কোয়ালিটি ভালো নয়। আবার কখনো কখনো দামি সবজি কিনলেও দেখি খারাপ হয়, যেটা হয়তো দোকানদার আপনাকে ঠকানোর জন্য হয়েছে, না হলে হয়তো নিজের ভুলের জন্য হয়। তাই সবজি কেনার জন্যও আপনাকে জানতে হয় যে কি কি বিচার করে সবজি কেনা উচিত।
বাজারে যখন সবজির সাপ্লাই অনেক বেশি হয় তখন সবজির দাম কম হয় এবং যখন সবজির সাপ্লাই কম হয় তখন সবজির দাম বেশি হয় তাই সবজি বাজার ও শেয়ার বাজারের ফান্ডামেন্টাল প্রায় একই।
তাই শেয়ার বাজারেও যখন আপনি শেয়ার কেনার জন্য যাবেন তখন শেয়ারের কোয়ালিটি অনুসারে দাম কম বেশি হয়। অনেক সময় যে শেয়ারের চাহিদা বেশি থাকে তার দাম বেশি হয় এবং যে শেয়ারের চাহিদা কম থাকে তার দাম কম হয়, তাই শেয়ার বাজারের ক্ষেত্রেও এই সাধারণ ফান্ডাটি আপনাকে মনে রাখতে হবে এবং শেয়ারের দাম Analyse করে আপনাকে শেয়ার কেনাবেচা করতে হবে।

তবে খুব সহজ ভাষায় বললে বলা যায় যে, যে বাজারের মাধ্যমে বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার কেনা বেচা করা, হয় সেটাই হলো শেয়ার বাজার বা স্টক মার্কেট। তো শেয়ার বাজার কি? আশা করি আপনারা বুঝতে পেরেছেন।
শেয়ার বাজার কিভাবে কাজ করে?
আশা করি আগের উদাহরণের মাধ্যমে আপনাদের শেয়ার বাজার সংক্রান্ত ধারণা কিছুটা ক্লিয়ার হয়েছে। চলুন আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এ জেনে নিই যে শেয়ার বাজার কাজ কী ভাবে করে।
শেয়ার বাজার সাধারণত দুটি এক্সচেঞ্জ নেটওয়ার্কের মাধ্যমে কাজ করে, একটি হলো NSE বা ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জ, আরেকটি হল BSE বা বোম্বে স্টক এক্সচেঞ্জ। বিভিন্ন ছোট বড় কোম্পানি NSE এবং BSE তে লিস্টটেড থাকে। এবং এই দুটি এক্সচেঞ্জ থেকেই শেয়ার কেনাবেচা করা হয়। NSE তে টপ 50 কোম্পানি কে নিফটি50 বলা হয় এবং BSE তে টপ 30 কোম্পানিকে সেনসেক্স বলা হয়।
হয়তো আপনারা এই নাম দুটি অনেক সময় শুনে থাকবেন। আপনি চাইলে NSE এর স্টক কিনে BSE তে এবং BSE এর স্টক কিনে NSE বিক্রি করতে পারেন।
শেয়ার কেনাবেচার জন্য ব্রোকার মিডিল ম্যান হিসাবে কাজ করে। মানে বলা যায় পুরো ম্যানেজমেন্ট এর কাজটা ব্রোকার করে, আর তার বিনিময় এ ব্রোকার আপনার কাছ থেকে ব্রোকারেজ চার্জ নেয়।
তবে স্টক কেনাবেচার মধ্যে আপনার টাকা পয়সার পুরো নিয়ন্ত্রণ আপনার ওপর থাকে, ব্রোকার চাইলেও আপনার টাকা পয়সা সে নিতে পারবে না, কারণ এই পুরো সিস্টেমটার উপর নজরদারি করে সেন্ট্রাল গভমেন্টের একটি অনলাইন সংস্থা, তাই আপনি নির্ভয় এ ভালো স্টক সিলেক্ট করুন এবং কিনে ফেলুন বাকি কাজটা আপনার ব্রোকার করে দেবে।

শেয়ার কিনতে হয় কিভাবে?/ শেয়ার মার্কেটে বিনিয়োগ কিভাবে করব?
শেয়ার কেনার জন্য বা শেয়ার বাজার এ বিনিয়োগ করার জন্য কিছু প্রয়োজনীয় কাজ আপনাকে করতে হবে। তো চলুন জেনে নিই স্টক মার্কেটে বিনিয়োগ করার জন্য কী কী প্রয়োজন হয় –
শেয়ার বাজার এ বিনিয়োগে শুরু করার আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কথা মনে রাখবেন, সবার প্রথমে আপনার লার্নিং মাইন্ডসেট হওয়া অত্যন্ত প্রয়োজন। শুরুতে আপনাকে লোভ থেকে দূরে থাকতে হবে এবং লাভ ও লোকসান এই দুটোই হতে পারে জেনে আপনাকে শেয়ার বাজার এ ইনভেস্ট করার জন্য প্রস্তুত হতে হবে।
শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ শুরু করার জন্য আপনাকে একটি ট্রেডিং একাউন্ট এবং একটি ডিম্যাট একাউন্ট খুলতে হবে।
আরও পড়ুন : অনলাইন ট্রেডিং কি? ট্রেডিং কিভাবে করব?
ট্রেডিং একাউন্ট:
ট্রেডিং একাউন্ট হলো এমন একটি অ্যাকাউন্ট যার মাধ্যমে আপনি শেয়ার বা স্টক কেনাবেচা করতে পারবেন। ট্রেডিং অ্যাকাউন্ট খুব সহজে অনলাইন এর মাধ্যমে যে কোনো ব্রোকার এর কাছে করাতে পারবেন। অনলাইন বিভিন্ন ব্রোকার কোম্পানি এভেলেবেল আছে যেমন zerodha, Angel one, Uptoxs, Motilal Oswal, ICICI Direct ইত্যাদি। এছাড়াও আরো অনেক কোম্পানি আছে যে কোন কোম্পানির অ্যাপ ডাউনলোড করে বা তাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করে একাউন্ট খুলতে পারেন।
ডিম্যাট অ্যাকাউন্ট:
ডিম্যাট অ্যাকাউন্ট হল এমন একটি অ্যাকাউন্ট, যেখানে আপনার শেয়ার জমা থাকে। যে কোনো ব্যাংকে গিয়ে আপনি ডিম্যাট অ্যাকাউন্ট খুলতে পারেন। এবং অনলাইন মাধ্যমেও আপনি অ্যাকাউন্ট খুলতে পারেন।
এছাড়াও ট্রেডিং শুরু করার জন্য আপনার প্যান কার্ড, আধার কার্ড এবং ব্যাংক একাউন্টের প্রয়োজন হয়। যে ব্যাংক একাউন্টটি আপনার ট্রেডিং একাউন্টের সঙ্গে সংযুক্ত থাকবে।
শেয়ার বাজার কি? ও শেয়ার বাজার এ কিভাবে বিনিয়োগ করবেন, এটা জানার পরই আপনি শেয়ার বাজারে ইনভেস্ট শুরু করতে পারবেন না। সঠিক জায়গায় বা সঠিক কোম্পানিতে investment করার জন্য আপনার যথেষ্ট জানকারি বা নলেজ থাকা প্রয়োজন, যেটা একদিনে হয় না।

যে নলেজ গুলো আপনি বিভিন্ন বই পড়ে, ভিডিও দেখে বা আর্টিকেল পড়ে পেতে পারেন। তাই দীর্ঘ সময় রিসার্চ করুন ও একটু একটু করে ইনভেস্ট করতে থাকুন। অবশ্যই আপনার অভিজ্ঞতা বাড়বে, ও শেয়ার বাজার আপনি আরও ভালোভাবে বুঝতে পারবেন।
আরও পড়ুন : ক্রিপ্টোকারেন্সি কি? ক্রিপ্টোকারেন্সিতে বিনিয়োগ কিভাবে করব?
উপসংহার
তো বন্ধুরা, আশা করি শেয়ার বাজার কি? শেয়ার বাজার কিভাবে কাজ করে? এবং শেয়ার বাজার এ কিভাবে বিনিয়োগ করবেন? এই সমস্ত ব্যাপার গুলো আপনারা ভালোভাবে বুঝতে পেরেছেন।
তবু ও আমি জানি শেয়ার বাজার অনেক বড় একটা প্ল্যাটফর্ম, একটা আর্টিকেল পড়ে সম্পূর্ণ ইনফরমেশন পাওয়া সম্ভব নয়, তাই আমি আবারও বলবো বিভিন্ন জায়গা থেকে শেয়ার মার্কেট সম্পর্কিত জ্ঞান অর্জন করুন এবং ছোট ছোট করে বিনিয়োগ শুরু করুন, তাতে আপনার জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা দুটোই বাড়বে এবং এইভাবে আপনি শেয়ার বাজারে পারদর্শী হয়ে উঠবেন এবং অবশ্যই অনেক মোটা টাকা উপার্জন করতে পারবেন।
কখনোই অন্য কারোর বুদ্ধিতে শুরুতে মোটা টাকা বিনিয়োগ করবেন না,তাতে আপনার অনেক বড় লোকসান হয়ে যেতে পারে। তাই লোকসান এড়াতে জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা অত্যন্ত জরুরী।
শেয়ার বাজার সম্পর্কিত আরো অধিক ইনফরমেশন জানার জন্য আমাদের ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ফলো করুন। আপনাদের জন্য আমাদের টিম খুবই পরিশ্রম করে ও রিসার্চ করে এই মূল্যবান আর্টিকেলগুলো তৈরি করে, আমাদের এই আর্টিকেলটি আপনাদের একটু হেল্পফুল মনে হলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না, আপনাদের একটি কমেন্ট আমাদের পরিশ্রম করতে আরও বেশি উত্সাহিত করে, ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন, ধন্যবাদ।
FAQs
ভারতের বৃহত্তম শেয়ার বাজার কোনটি?
বর্তমানে ভারতের বৃহত্তম শেয়ারবাজার হলো BSE বা বোম্বে স্টক এক্সচেঞ্জ
শেয়ার ব্যবসা করতে কত টাকা লাগে?
শেয়ার ব্যবসা শুরু করার জন্য কোন মোটা অংকের টাকা বা নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকার প্রয়োজন হয় না। আপনি অনলাইনের মাধ্যমে শেয়ার বিজনেস সম্পূর্ণ ফ্রিতে শুরু করা যায়, শুধুমাত্র আপনি যত টাকার স্টক কিনতে চান সেটাই আপনাকে ইনভেস্টমেন্ট করতে হবে।
শেয়ার বাজার কত প্রকার কি কি?
শেয়ার সাধারণত ৫ প্রকারের হয়:-
ইকুইটি শেয়ার, প্রেফারেন্স শেয়ার, কিউমুলেটিভ রেফারেন্স শেয়ার, রিডেমেবল শেয়ার ও নন ভোটিং সাধারণ শেয়ার