Sharewhy.com ওয়েবসাইটে আপনাদেরকে অনেক অনেক স্বাগত জানাই। আজ আপনারা শেয়ার বাজার বিনিয়োগের পদ্ধতি সম্পর্কে স্টেপ বাই স্টেপ জানতে পারবেন।
শেয়ার বাজার এমন একটি বাজার যেখানে আপনি যদি সঠিক পদ্ধতি অবলম্বন না করে যদি বিনিয়োগ করেন তাহলে আপনার অনেক বড় লোকশান হয়ে যেতে পারে। বিশেষ করে যাদের শেয়ার বাজার সম্পর্কে তেমন কোন জ্ঞান নেই, যারা শেয়ার বাজারে কোটিপতি হওয়ার জন্য প্রবেশ করে এবং শেয়ার বাজারকে লটারি ভেবে প্রচুর টাকা তারা সেখানে বিনিয়োগ করে। এবং শেষে সর্বস্ব তারা হারিয়ে ফেলে।
শেয়ার বাজারে এ সফল হতে গেলে আপনাকে সঠিক বিনিয়োগ পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে। তথা আপনাকে জানতে হবে কিভাবে শেয়ার বাজার কাজ করে?
কিভাবে শেয়ার বাজার এ বিনিয়োগ করতে হয় বা কিভাবে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করলে আপনি লাভবান হতে পারবেন, কোন কোন দিক অবলম্বন করা দরকার এই সমস্ত দিক আপনাকে ভালোভাবে ফলো করতে হবে,তাই চলুন জেনে নেওয়া যাক শেয়ার বাজারে বিনিয়োগের পদ্ধতি সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলি।
শেয়ারবাজার কি?
শেয়ার বাজার এ বিনিয়োগ করতে গেলে সবার প্রথমে আপনাকে জানতে হবে শেয়ারবাজার কি বা শেয়ার বাজার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য। আগের একটা আর্টিকেলে আমরা শেয়ারবাজার কি? এই সম্পর্কে বিশেষ একটি উদাহরণের সাহায্যে বিস্তারিত আলোচনা করেছিলাম আপনি এখানে ক্লিক করে আর্টিকেলটি পড়তে পারেন।

শেয়ার বাজার হলো এমন একটি বাজার যেখানে বিভিন্ন কোম্পানির স্টক কেনাবেচা করা হয়। যখন কোন কোম্পানির ফাইন্ডিং এর প্রয়োজন পড়ে বা কোম্পানিকে বড় করার জন্য লোনের প্রয়োজন হয় তখন সেই সমস্ত কোম্পানি গুলো তাদের কোম্পানির কিছু পরিমান শেয়ার বিক্রি করে শেয়ার হোল্ডার দের কাছ থেকে ফান্ডিং বা টাকা নেয়।
আপনি চাইলে সেই কোম্পানির বেশি শেয়ার কিনতে পারেন বা কম শেয়ারও কিনতে পারেন। সেই কোম্পানির পারফরম্যান্স অনুযায়ী আপনার প্রফিট বা লভ্যাংশ নির্ভর করে। মানে সেই কোম্পানি যদি গ্রো করে তবেই আপনার বিনিয়োগের টাকা গ্রো করবে, আর যদি সেই কোম্পানি ডাউন হয়ে যায় বা কোন কারণে গ্রো করতে না পারে তাহলে আপনার লোকসান হবে।
সেই কারণে শেয়ার বাজার সম্পর্কে না বুঝে বিশেষ করে নতুনদের জন্য শেয়ার বাজার এ বিনিয়োগ করা একেবারেই ঠিক নয়, তাই আগে অবশ্যই শেয়ার বাজার ভালো করে বুঝুন, সিস্টেম ফলো করুন এবং অল্প অল্প করে বিনিয়োগ শুরু করুন এবং আজকে যে সমস্ত টিপস গুলো আলোচনা করতে চলেছি সেগুলো অবশ্যই অবলম্বন করবেন।
আরও পড়ুন : শেয়ার বাজার A TO Z | শেয়ার বাজার থেকে কোটি টাকা আয় করার সহজ উপায়
অ্যাকাউন্ট খোলা এবং বিস্তারিত
শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ শুরু করার জন্য সবার প্রথমে আপনাকে একটি ট্রেডিং একাউন্ট ও একটি ডিম্যাট অ্যাকাউন্ট এর প্রয়োজন পড়ে। যদি আপনার অনলাইন সম্পর্কে ধারণা থাকে তাহলে ট্রেডিং অ্যাকাউন্ট আপনি অনলাইনের মাধ্যমে খুলতে পারেন।
তাছাড়া আপনি চাইলে যে কোন ব্রোকারের মাধ্যমে ট্রেডিং একাউন্ট খুলতে পারেন। কিছু উল্লেখযোগ্য ব্রোকার কোম্পানির নাম হলো Motilal Oswal, Zerodha, grow, Angel one ইত্যাদি। এছাড়াও আরো কিছু ট্রেডিং কোম্পানি আছে, যেখানে আপনি ট্রেডিং একাউন্ট খুলতে পারেন। ট্রেডিং একাউন্ট এর মাধ্যমেই আপনি বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার বা স্টক কেনাবেচা করতে পারবেন।

ট্রেডিং একাউন্ট ছাড়াও আপনাকে ডিম্যাট অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে। ডিমেট অ্যাকাউন্ট আপনি যেকোনো ব্যাংকে গিয়ে খুলতে পারেন। আপনি ট্রেডিং একাউন্ট এর মাধ্যমে যে সমস্ত শেয়ারগুলো কিনবেন সেই সমস্ত শেয়ার গুলো আপনার ডিম্যাট অ্যাকাউন্টে জমা থাকবে।
ট্রেডিং একাউন্ট এবং ডিম্যাট একাউন্ট খোলার জন্য প্যান কার্ড, আধার কার্ড এবং একটি ব্যাংক একাউন্টের প্রয়োজন হয়। তাই আপনার যদি এই সমস্ত জিনিসগুলো আগে থেকেই থাকে তাহলে আপনি সহজে ট্রেডিং অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন।
আরও পড়ুন : অনলাইন ট্রেডিং কি? ট্রেডিং কিভাবে করব?
একই কোম্পানিতে বিনিয়োগ নয়
শেয়ার বাজারে সফল হতে গেলে বা শেয়ার বাজার থেকে মোটা টাকা উপার্জন করতে গেলে আপনাকে কখনোই একটা কোম্পানিতে বিনিয়োগ করলে হবে না, সব সময় আপনাকে একাধিক কোম্পানিতে বিনিয়োগ করতে হবে।
অন্তত আপনাকে শুরুতে পাঁচ থেকে দশটি ভালো স্টকে বিনিয়োগ করতে হবে। কারণ যদি আপনি দু-চারটি স্টকে লোকসান খান তাহলে অন্য স্টকগুলি আপনার সেই লোকসান পুষিয়ে দেবে।
আরেকটা কথা মনে রাখবেন, সবসময় আলাদা আলাদা সেক্টরের কোম্পানিতে ইনভেস্টমেন্ট করবেন। কারণ একই সেক্টরে ইনভেস্ট করলে আপনার লোকসান হতে পারে আর আলাদা আলাদা সেক্টরে করলে কখনোই সমস্ত সেক্টর একসঙ্গে আপ ডাউন হয় না। সেক্ষেত্রে লাভবান আপনিই হবেন, তাই সবসময় একাধিক কোম্পানি স্টকে এবং আলাদা আলাদা সেক্টর ইনভেস্ট করুন।
শেয়ার কেনার আগে সবসময় আপনাকে জানতে হবে যে আপনি যে কোম্পানি শেয়ার কিনতে চলেছেন সেই কোম্পানির গত তিন বছর বা তারও আগে কিরকম পারফরম্যান্স করে আসছে এবং এখন সেই কোম্পানি কিরকম পারফরম্যান্স করছে।

আগে যে সমস্ত বিনিয়োগকারীরা সেই কোম্পানিতে বিনিয়োগ করেছিল তারা কি রকম রিটার্ন পেয়েছেন, বা তার History আপনাকে অবশ্যই চেক করতে হবে, এবং সঙ্গে এটাও জানতে হবে যে অতীতে সেই কোম্পানির নামে কোন ফ্রড কেস আছে কিনা।
যদি কোন কোম্পানির খারাপ পারফরমেন্স হয় বা কোন ফ্রড কোর্ড কেস থাকে তাহলে সেই কোম্পানিতে কখনই বিনিয়োগ করবেন না, সব সময় হাই পারফরমেন্স কোম্পানি স্টক বা শেয়ার কিনবেন। যেমন টি সি এস, উইপ্র রিলায়েন্স, আদানি গ্রুপ ইত্যাদি।
আরও পড়ুন : শেয়ার বাজার কি? শেয়ার কিনতে হয় কিভাবে? SHARE BAZAR
লম্বা সময়ের জন্য বিনিয়োগ করুন
শেয়ার বাজারে সফল হতে গেলে বা শেয়ার বাজার থেকে কোটি কোটি টাকা উপার্জন করতে গেলে ভালো কোম্পানির স্টকে দীর্ঘ সময়ের জন্য বিনিয়োগ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আর এটি হল শেয়ার ব্যবসার অন্যতম একটি শেয়ার কেনার কৌশল।
পৃথিবীতে যে সমস্ত মানুষ শেয়ার মার্কেট থেকে মোটা টাকা উপার্জন করেছেন বা করছেন তাদের মধ্যে বেশিরভাগ ব্যক্তি দীর্ঘ সময়ের জন্য শেয়ার মার্কেটে বিনিয়োগ করেছিলেন।
আর শেয়ার মার্কেটে দীর্ঘ সময়ের জন্য বিনিয়োগ করলে আপনি একসময় অনেক মোটা টাকা রিটার্ন পাবেন এবং তার কিছু পরিমাণ টাকা আপনি রেখে যদি সেই টাকা দ্বিতীয়বারের জন্য বিনিয়োগ করেন তাহলে পরবর্তীকালে সেই টাকা যখন রিটার্ন আসবে তার কয়েক গুণ বেশি টাকা আপনি উপার্জন করতে পারবেন। আর এইভাবে আপনি আপনার লাভের পরিমাণ ও অ্যাসেট বাড়াতে পারবেন।
ট্রেডিং কি
বর্তমানে অনলাইনে শেয়ার ব্যবসা বা ট্রেডিং করে অনেক লোক শেয়ার বাজার থেকে ভালো টাকা উপার্জন করছে। কিন্তু শেয়ার বাজারকে বা ট্রেডিং বিজনেসকে লটারি ভেবে অনেক ব্যক্তি এখান থেকে ভিখারী হয়ে ফিরছেন।

তথা ট্রেডিং বিজনেস এ লাভের চেয়ে বেশিরভাগ ব্যক্তির লোকসান বেশি হয়। ট্রেডিং করতে গেলে শেয়ার বাজার জ্ঞান ও সঠিক স্ট্রাটেজির প্রয়োজন পড়ে, কিন্তু বেশিরভাগ ব্যক্তি সে স্ট্র্যাটেজি ফলো না করে তাড়াহুড়ো করে শেয়ার কিনে নেয় এবং সেল করে দেয় আর সেখানে তাদের লোকসান হয়ে যায়।
আরও পড়ুন : ফরেক্স ট্রেডিং কি? কিভাবে ফরেক্স ট্রেডিং করে আয় করবেন?
উপসংহার
তাই আবারও বলবো শেয়ার বাজার এ সফল হতে গেলে সঠিক পদ্ধতিত বা শেয়ার বাজার বিনিয়োগের পদ্ধতি সঠিকভাবে অবলম্বন করা অত্যন্ত প্রয়োজন। তাই শেয়ার বাজার থেকে কোটি কোটি টাকা আয় করার জন্য বা শেয়ার বাজারে সফল হওয়ার জন্য শেয়ার বাজার সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করা আপনার অত্যন্ত জরুরী। আপনাকে জানতে হবে, আপনাকে বুঝতে হবে, কিভাবে শেয়ার বাজার কাজ করে, এবং আজকের এই টিপসগুলি আপনাদেরকে বিস্তারিত ফলো করতে হবে।
আর সবথেকে বেস্ট পয়েন্ট হল শেয়ার কেনার কৌশল এর ক্ষেত্রে আপনি যদি সঠিক স্ট্যাটেজি বা পদ্ধতি অবলম্বন করে, ভালো কোম্পানির শেয়ার বা স্টক কিনতে পারেন অবশ্যই আপনি সফল হবেন। তাই শেষে বলা যায় সঠিক বিনিয়োগের পদ্ধতি আপনাকে শেয়ার বাজারে সফল করে তুলবে।
আজকের আর্টিকেলটি আপনাদের কেমন লাগলো তার ফিডব্যাক কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না, সবাই সুস্থ থাকুন ভালো থাকুন, ধন্যবাদ।
FAQS
শেয়ার বাজার শিখতে চাই
আপনি যদি শেয়ার বাজার ভালো করে শিখতে চান তাহলে বিভিন্ন বই পড়ে, ভিডিও দেখে, বা আর্টিকেল পড়ে এবং নিয়মিত ছোট ছোট বিনিয়োগ করে আপনি শেয়ার বাজার সম্পূর্ণ ভাবে শিখতে পারেন।
শেয়ার বাজারে সর্বনিম্ন কত টাকা বিনিয়োগ করা যায়
শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করার জন্য কোন নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকার প্রয়োজন হয় না। আপনি আপনার ইচ্ছামত শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করতে পারেন বা শেয়ার কিনতে পারেন।
শেয়ার কেনার কতদিন পর বিক্রি করা যায়
শেয়ার কেনার পর আপনি কিছুক্ষণের মধ্যে বা কয়েক দিনের মধ্যে, বা কয়েক বছরের মধ্যে বা আপনার ইচ্ছামত বিক্রি করতে পারেন, শেয়ার বিক্রি করার কোন সময়সীমা হয় না।